নওমুসলিম মুজাহিদের জীবন বদলালো আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সহায়তায়
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের চর লরেন্স গ্রামের নওমুসলিম মুহাম্মদ মুজাহিদ বর্তমানে সেলুন ব্যবসা করে নতুন জীবন গড়ে তুলেছেন। আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় তিনি এখন মাসে ৩৫-৪০ হাজার টাকা আয় করছেন। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সুখী পরিবার গড়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। মুজাহিদের জন্ম জগদীশ চন্দ্র শীলের ঘরে। ইসলাম গ্রহণের আগে তার নাম ছিল হিরন চন্দ্র শীল।
জানা যায়, এইচএসসি শেষ করার পর জীবিকার সন্ধানে তিনি ওমানে যান। সেখানে থাকাকালীন সময়ে কুরআন, হাদিস এবং সাহাবিদের জীবনী পড়তে পড়তে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ওমানে জীবনের দিনগুলো ভালোই কাটছিল, তবে হঠাৎ ভিসাজনিত সমস্যায় দেশে ফিরতে হয় তাকে। দেশে ফিরে পড়েন অর্থনৈতিক সংকটে। ইসলাম গ্রহণের কারণে পরিবার থেকেও সমর্থন পাননি। বাধ্য হয়ে মাত্র আট হাজার টাকা বেতনে একটি কোম্পানিতে চুল কাটার কাজ শুরু করেন। এসময় ২০২১ সালে তিনি একজন হাফেজা নারীকে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে চাকরির মেয়াদ শেষ হলে তিনি দেশে ফিরে স্থানীয় একটি সেলুনে কাজ শুরু করেন, যেখানে তার মাসিক আয় ছিল ১২-১৩ হাজার টাকা।
পরে আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের দক্ষতা উন্নয়নভিত্তিক উদ্যোক্তা প্রকল্পের খবর পান মুজাহিদ। তিনি সেলুন খোলার জন্য আবেদন করলে মোট ৬ ধাপে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার সহায়তা পান। এ অর্থ দিয়ে তিনি চর লরেন্স বাজারে ‘আল আকসা সেলুন’ নামে নিজস্ব দোকান চালু করেন। বর্তমানে সেখানে একজন সহকারী নিয়েও কাজ করছেন তিনি। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, তার সেলুনে দাড়ি কাটার কিংবা ক্লিন শেভ করার কাজ করা হয় না।
মুহাম্মদ মুজাহিদ বলেন, “আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সহায়তায় আমি নিজের সেলুন চালু করতে পেরেছি। এখন ভালো উপার্জন হচ্ছে, স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সুখে আছি।”
আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের কমলনগর উপজেলা প্রতিনিধি মো. শরিফুল ইসলাম জানান, “দেশজুড়ে আমাদের দক্ষতাভিত্তিক উদ্যোক্তা তৈরির প্রকল্প চলছে। নওমুসলিম মুহাম্মদ মুজাহিদ আবেদন করার পর যাচাই-বাছাই করে তাকে সেলুন স্থাপনে সহযোগিতা করা হয়। এখন তিনি ভালো আছেন, আমরাও নিয়মিত তার খোঁজ রাখি। শুধু নওমুসলিম বা মুসলিম নয়, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর প্রতিও আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন সহযোগিতা করে থাকে।

No comments