৩১ মাস পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে
৩১ মাস পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ৩২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বাজার থেকে অতিরিক্ত ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার কেনার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস রিজার্ভ দাঁড়ায় ৩২ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্ধারিত বিপিএম৬ পদ্ধতিতে হিসাব করলে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৭ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।
রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বৃদ্ধির কারণে ডলার প্রবাহ বেড়েছে, যার ফলে বাজারে ডলারের দর কিছুটা কমে আসে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে উদ্বৃত্ত ডলার কিনে নিচ্ছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক মোট ২১২ কোটি ৬০ লাখ ডলার কিনেছে। বর্তমানে ডলারের বিনিময় হার ১২২ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে, যদিও জুলাই মাসে এটি কমে ১১৯ টাকা ৫০ পয়সায় নেমেছিল।
ডলার প্রবাহ বৃদ্ধির প্রভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক ছুঁয়েছিল। এরপর ধারাবাহিকভাবে কমতে কমতে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে গত জুলাই শেষে রিজার্ভ দাঁড়ায় ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারে। সরকার পরিবর্তনের পর থেকে এখন পর্যন্ত রিজার্ভ বেড়েছে ৬ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার।
২০২৩ সালের ৮ মার্চের পর প্রথমবার রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামে। একই বছরের জুন থেকে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক বিপিএম৬ মানদণ্ডে রিজার্ভের পরিসংখ্যান প্রকাশ শুরু করে। সে সময় রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে ২০২৪–২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই অর্থবছরে প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত এসেছে আরও ৮৮৭ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি। একই সঙ্গে রপ্তানি আয় বেড়েছে প্রায় ৬ শতাংশ।
এছাড়া আইএমএফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণপ্রাপ্তিও রিজার্ভ বৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। এসব কারণে দীর্ঘ সময় পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছেছে।

No comments