পিআরসহ ৫ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, জুলাইয়ের আন্দোলন ছিল স্বৈরতন্ত্র থেকে দেশকে মুক্ত করা, ৫৪ বছরের জঞ্জাল দূর করা, ক্ষমতার ভারসাম্য ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সক্রিয় করার জন্য। সেইসঙ্গে সকল নাগরিকের ভোটাধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই জনগণ রক্ত দিয়েছে। তাই জুলাই-পরবর্তী বাংলাদেশে "সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন"—এই ধারাবাহিকতা রক্তের দায় ও অঙ্গীকার।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সংস্কার ও বিচারকে উপেক্ষা করে নির্বাচনকে প্রধান্য দেওয়া হলে দেশ আবারও পুরোনো অশুভ বন্দোবস্তে ফিরে যাবে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, কিছু রাজনৈতিক পক্ষের বক্তব্য ও আচরণ দেখে মনে হচ্ছে জুলাইয়ের আন্দোলন কেবল ক্ষমতার পালাবদলের জন্য হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তা ছিল না। আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল জাতীয় সংস্কার, বিচার নিশ্চিত করা এবং গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলা।
তিনি যুগপৎ আন্দোলনের দাবিগুলো তুলে ধরে বলেন, আমাদের অবস্থান পরিষ্কার—
-
জুলাই সনদের বাস্তবায়ন চাই।
-
ফ্যাসিবাদের বিচার চাই।
-
ফ্যাসিবাদের দোসরদের রাজনীতি থেকে বহিষ্কার চাই।
-
জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ চাই।
-
আগামী জাতীয় নির্বাচন পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, "আমরা কোনো দলের বিরুদ্ধে নই, বরং জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের রক্তের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই এই অবস্থান নিয়েছি। ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক সংগঠনগুলো একসঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে এই দাবিগুলোতে একমত হয়েছে। এখন থেকে আমরা যুগপৎ আন্দোলনে নামবো। দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি ধারাবাহিকভাবে চলবে এবং ধীরে ধীরে আরও কঠোর হবে।"
যুগপৎ আন্দোলনের দাবি
১. জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
২. নির্বাচন অবশ্যই পিআর পদ্ধতিতে।
৩. সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ।
৪. গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করতে হবে।
৫. বিশেষ ট্রাইব্যুনালে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের বিচার এবং বিচার চলাকালীন তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধকরণ।
কর্মসূচি
১. ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ।
২. ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ।
৩. ২৬ সেপ্টেম্বর সারাদেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মসূচি।

No comments