ওবায়দুল কাদেরের তদবিরে রক্ষা পেলেও এবার সালমার কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসছে
নোয়াখালী সরকারি কলেজে ৩১ মাস অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন প্রফেসর সালমা আক্তার। এই সময়ের মধ্যে তিনি কলেজের কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। কাগজপত্রের হিসাব অনুযায়ী, মাত্র ৫ কোটি ৩ লাখ টাকা লুটপাটের প্রমাণ মিলেছে। যুগান্তরে ২০২৩ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই আর্থিক অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে।
এর আগে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের তদবিরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁর তদন্ত ফাইল স্থগিত করে। তবে এক বছর পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পৃথক তদন্তে অধ্যক্ষের লুটপাটের পুরো চিত্র প্রকাশ পায়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, “দুদক যদি অভিযোগটি সঠিকভাবে তদন্ত করত, তবে নোয়াখালী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সালমা আক্তার ইতিমধ্যেই জেলে থাকতেন। একজন শিক্ষক কিভাবে কলেজের অর্থ আত্মসাৎ করতে পারেন, তা তদন্ত প্রতিবেদন না দেখলে বোঝা যায় না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টাকা লুটপাট করা এমন কাজ যা ক্ষমার যোগ্য নয় এবং এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি থাকা উচিত।”
অভিযোগের বিস্তারিত:
সালমা আক্তার বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নোয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। দায়িত্বকাল ছিল ৩১ মাস। এ সময়ে তিনি:
দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান শাখায় আসন সংখ্যার অতিরিক্ত ২৩৭ জন ভর্তি করে প্রায় এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।
জুনিয়র সহকর্মীর সম্মানি ৫৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়।
নম্বরপত্র জালিয়াতি।
জুনিয়র সহকর্মীকে ছাত্রদল ও শিবিরের ট্যাগ দিয়ে বিভাগীয় মামলা দিয়ে হয়রানি।
কলেজের কক্ষে গরুপালন।
বনবিভাগের অনুমতি ছাড়া গাছ কেটে বিক্রি।
ছাত্রলীগ নেতাদের কলেজের পুকুর লিজ দেওয়া।
শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা তহবিল, উন্নয়ন তহবিল, বিজ্ঞান ক্লাব, লাইব্রেরি, সাহিত্য-সংস্কৃতি, রোভার্স, ম্যাগাজিন, আইটি, রেড ক্রিসেন্ট ও চিকিৎসা তহবিলসহ অন্তত ২২টি খাত থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ।
বর্তমানে প্রফেসর সালমা আক্তার অবসরোত্তর ছুটিতে রয়েছেন।

No comments